আবারও বাংলাদেশকে তিস্তার পানি না দেয়ার কথা জানালেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার দাবি, শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পানি থাকে না। যতটুকু থাকে, তা দেয়া হলে রাজ্যটির মানুষই পানি পাবে না।
সোমবার (৮ জুলাই) রাজ্য সরকারের সচিবালয় ‘নবান্ন’তে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন মমতা। এসময় বাংলাদেশের সঙ্গে পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন ইস্যুতে মোদি সরকারের সমালোচনাও করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, তিস্তায় কি পানি আছে, যে বাংলাদেশকে দেয়া যাবে? তাহলে তো উত্তরবঙ্গের মানুষ খাওয়ার পানিই পাবেন না। বর্ষার তিস্তার সঙ্গে যেন গ্রীষ্মের তিস্তাকে এক করে দেখা না হয়।
গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির নবায়ন নিয়ে মোদি সরকারের সমালোচনা করে মমতা বলেন, পশ্চিমবঙ্গকে উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় সরকার গঙ্গার চুক্তি নবায়ন করতে চাইছে। এটা আমরা মেনে নেব না। কারণ, গঙ্গার পানির সঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ জড়িত। যেমনটা তিস্তার পানির সঙ্গে। তাই এই চুক্তি করতে হবে পশ্চিমবঙ্গকে নিয়েই।
মমতা বলেছেন, ‘সিকিম থেকে নেমে আসা তিস্তা নদীর ১৪টি স্থানে সিকিম সরকার বাঁধ দিয়ে ১৪টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করেছে। এতে করে ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সব জলই টেনে নিচ্ছে সিকিম সরকার। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে বারবার জানালেও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে সেই সমস্যায় এখনো ভুগছে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তাপারের মানুষ।’
১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি সম্পাদন হয়েছিল। চুক্তি করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩০ বছর মেয়াদি এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালে।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, আলোচনা দুই রকমের হয়। দ্বিপক্ষীয় ও ত্রিপক্ষীয়। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয় দুই দেশের সরকারের মধ্যে। আর স্বাভাভিকভাবে সেখানে রাজ্যের কোনো ভূমিকা থাকে না। আর ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে দুই দেশ ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের মধ্যে। তখন নিশ্চয়ই রাজ্যের বক্তব্য শোনা হবে।